২ দিনের ব্যবধানে টেকনাফে ৭ জন অপহরণ

  বিশেষ প্রতিনিধি    01-05-2023    87
২ দিনের ব্যবধানে টেকনাফে ৭ জন অপহরণ

কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা পাহাড়ে সন্ত্রাসীরা আরও দুজনকে অপহরণ করেছে। এর দুই দিন আগে আরও ৫ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটে। এই নিয়ে টেকনাফে সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

রোববার (৩০ এপ্রিল) সকালে টেকনাফের বাহারছড়ার জাহাজপুরা পাহাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

অপহৃতরা হলেন, একই এলাকার মো. রহিম (৩২) ও মো. রেদোয়ান (২০)।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) অপহৃতরা হয়েছেন, টেকনাফের নয়াপাড়ার রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের সি ব্লকের হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. বেলাল, মোহাম্মদ ইলিয়াসের ছেলে নূর কামাল, উবায়দুল্লাহর ছেলে নূর আরাফাত, বি ব্লকের মো. রফিকের ছেলে ওসমান ও ডি ব্লকের মাহাত আমিনের ছেলে নুর কামাল।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল হালিম। তিনি বলেন, ৩০ এপ্রিল সকালে দুজন কৃষক অপহরণের কথা শুনেছি। পরে পুলিশের একটি টিম এলাকায় যায়। এরপর পাহাড়ে অভিযান শুরু করে।

এর আগে ৫ রোহিঙ্গা অপহরণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, তাদের মধ্যে ৫ জন উদ্ধার হয়েছে। তবে এসব ঘটনার পেছনে কারা আছে তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।

টেকনাফ বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকন বলেন, সকালে পাঁচজন কৃষক পাহাড়ের কাছাকাছি পানের বরজে কাজ করতে গেলে ডাকাতের একটি দল তাদের উপর হামলা চালায়। এসময় তিনজন পালিয়ে গেলেও ২ জনকে অস্ত্রের মুখে ধরে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় পালিয়ে আসার সময় ২ জনকে কুপিয়ে জখম করে।

তিনি জানান, এই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ি অস্ত্রধারী ডাকাত দল অপহরণ ও মুক্তিপণ চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে এখানকার বাসিন্দারা ভয়ভীতির মধ্য রয়েছে।

কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সদস্য সচিব এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, ২০১৭ সালের রোহিঙ্গা আগমনের পর থেকে টেকনাফ উপজেলায় কয়েক দিন পর পর স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অপহরণ হচ্ছে। তাদের পরবর্তী মুক্তিপণ আদায় করে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এটি পর্যটন নগরীর জন্য অশুভলক্ষণ। প্রতিনিয়ত উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠছে অপহরণের ঘটনাগুলো।এসব ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনার চোখে না দেখে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচিত হবে দ্রুত কর্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য মতে, গত ৬ মাসে ক্যাম্পসহ টেকনাফের পাহাড়ে ৭২ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৪০ জন রোহিঙ্গা নাগরিক ও ৩২ জন স্থানীয় বাসিন্দা।

সবশেষ গত ২৬ এপ্রিল নয়াপাড়া ক্যাম্পের তিন শিশু অপহরণের শিকার হন। পরে মুক্তিপণ দিয়ে তারা ফিরে আসে। এছাড়া গত ৩ মার্চ ২ শিশুকে অপহরণের ৮ ঘণ্টা পর ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয় অহরণকারীরা। এর আগে গত ৮ জানুয়ারি টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং এলাকায় খেত পাহারারত ৪ কৃষককে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

পরে তারা ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ফেরেন। এছাড়া গেল ১৮ ডিসেম্বর টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা এলাকার একটি পাহাড়ের ভেতর খালে মাছ ধরতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন ৮ ব্যক্তি। পরে তারাও ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তারা ফিরে আসেন।

সারাদেশ-এর আরও খবর