ঈদগাঁও উপজেলা প্রশাসনিক ভবন স্থাপনের বিরুদ্ধে করা রিট হাইকোর্টে খারিজ

  বিশেষ প্রতিনিধি    02-06-2023    83
ঈদগাঁও উপজেলা প্রশাসনিক ভবন স্থাপনের বিরুদ্ধে করা রিট হাইকোর্টে খারিজ

কক্সবাজারে নবগঠিত ঈদগাঁও উপজেলার প্রশাসনিক ভবন উপজেলার ঈদগাঁও মৌজা’র ইসলামাবাদ ইউনিয়নে স্থাপনের সরকারি সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে ঈদগাঁও ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দ আলম ও অন্যান্য কর্তৃক দায়েরকৃত রীট আবেদনটি মহামান্য হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছেন ১ জুন বৃহস্পতিবার ।

উল্লেখ্য, নিকারের ১১৭তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিগত ১০/০৮/২০২১ইং তারিখ কক্সবাজার সদর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন যথাক্রমে ঈদগাঁও, ইসলামাবাদ, জালালাবাদ , ইসলামপুর এবং পোকখালী ইউনিয়ন’র সমন্বয়ে ঈদগাঁও উপজেলা গঠিত হয়।

পরবর্তীতে নিকারের সিদ্ধান্ত এবং নতুন উপজেলা, থানা এবং তদন্ত কেন্দ্র স্থাপনের সংশোধিত নীতিমালা, ২০০৪ এ উল্লেখিত শর্তাবলী মেনে জেলা স্থান নির্বাচন কমিটি কর্তৃক সরেজমিন পরিদর্শন শেষে ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ঈদগাঁও মৌজায় অবস্থিত প্রস্তাবিত স্থানটিকে ঈদগাঁও উপজেলা প্রশাসনিক ভবন স্থাপনের জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করা হয়।

অত:পর জেলা প্রশাসক, কক্সবাজারের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বিগত ০২/১১/২০২১ইং তারিখের পত্রযোগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রশাসনিক ভবন স্থাপনের জন্য নির্ধারিত স্থানে ৬ একর জমি অধিগ্রহণের প্রশাসনিক অনুমোদন দেন।

এ অনুমোদনে চ্যালেঞ্জ করে ঈদগাঁও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ছৈয়দ আলম ও আরো কয়েকজন মিলে এর বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্টে রীট মামলা দায়ের করেন। প্রাথমিক শুনানী শেষে মহামান্য হাইকোর্ট ০২/১১/২০২১ইং তারিখে প্রশাসনিক অনুমোদনের উপর স্থগিতাদেশ দিলেও পরবর্তীতে সরকার পক্ষের আবেদনক্রমে মহামান্য আপীল বিভাগ তাতে স্থগিতাদেশ প্রদান করেন এবং মহামান্য হাইকোর্টকে রুল শুনানী অন্তে দ্রুত নিষ্পত্তির আদেশ দেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট দীর্ঘ শুনানী শেষে ১ জুন বৃহস্পতিবার উপরোক্ত রীট আবেদনটি খারিজ করে পূর্বে ইস্যু করা রুলের নিষ্পত্তি করে দেন।

উল্লেখ্য, সরকার পক্ষের পাশাপাশি ইসলামাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবদুর রাজ্জাক উক্ত রীট আবেদনে আদালতের অনুমতি নিয়ে সংযুক্ত বিবাদী (added repondent) হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। রীট আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে মামলা পরিচালনা করেন সিনিয়র এডভোকেট জনাব মনজিল মোর্শেদ।

অন্যদিকে আবদু রাজ্জাকের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ। তাঁকে সহায়তা করেন এডভোকেট হুমায়ুন কবির আহসান, ব্যারিস্টার সাব্বির আজম এবং এডভোকেট মোহাম্মদ শাহজাহান। সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট মো: আশরাফুল আলম (নোবেল)। দীর্ঘ প্রতিক্ষিত এ রায় ঘোষণার পর নবসৃষ্ট ঈদগাঁও উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে স্বস্তি ও আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। সদর দপ্তর স্থাপন নিয়ে নিরর্থক বিরোধ উপজেলা গঠন সংক্রান্ত সমস্ত কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে আছে ।

এমন কি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন গুলোর নির্বাচনও করা যাচ্ছে না প্রশাসনিক জটিলতায় । বিবাদী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, মহামান্য হাইকোর্ট দু’পক্ষকে সূদীর্ঘ ও বিস্তারিত শুনানীর সুযোগ দিয়েছেন এবং বিদ্যমান আইন, নিকার এর সিদ্ধান্তের আলোকে রীট আবেদনটি রক্ষনীয় নয় মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন,এ রায়ের ফলে ঈদগাঁও উপজেলা প্রশাসনিক ভবন সরকার কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে স্থাপন করতে আপাততঃ আর কোন আইনী বাধা নেই। প্রতিপক্ষের আইনজীবী সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোর্শেদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে অসমর্থিত সুত্রে জানা গেছে, এ রায়ের বিরুদ্ধে ফের আপীলের প্রস্তুতি চলছে ।

সরকার পক্ষের আইনজীবী আশরাফুল আলম নোবেল বলেন, এ রায়ে প্রমান হল যে, স্থান নির্বাচনে সরকার কোন ভুল সিদ্ধান্ত নেয়নি। স্থানীয় জনগণের প্রত্যাশা ও বৃহত্তর স্বার্থে কাঁদা ছুড়াছুঁড়ি বন্ধ করে ঈদগাঁও উপজেলা প্রশাসনিক ভবন স্থাপনের অবশিষ্ট কর্মকাণ্ড আবার পুরোদমে শুরু করতে সকলের এগিয়ে জরুরি ।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি উক্ত রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং আশা করেন যে, নির্ধারিত স্থানে ঈদগাঁও উপজেলা প্রশাসনিক ভবন স্থাপনের কাজ অনতি বিলম্বে শুরু হবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।

সারাদেশ-এর আরও খবর