কক্সবাজার পৌরসভার অলি গলিতে ময়লা-আবর্জনার স্তূপে বেড়েছে দুর্ভোগ

  বিশেষ প্রতিনিধি    08-06-2023    89
কক্সবাজার পৌরসভার অলি গলিতে ময়লা-আবর্জনার স্তূপে বেড়েছে দুর্ভোগ

কক্সবাজার পৌরসভার মধ্যভাগে অবস্থিত গোলদিঘি এলাকার আশপাশে তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি পাঁচটি হাসপাতাল, স্টেডিয়ামসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থাপনা রয়েছে।

অথচ দিঘির তিন পাশের বৈদ্যঘোনা, ঘোনাপাড়া, বৌদ্ধমন্দির, বিকেপাল,হাসপাতাল সড়ক ও মোহাজের পাড়া সড়কে আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

এসব এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, জনপ্রতিনিধিরা সবাই ব্যস্ত নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা নিয়ে। এসব ময়লা-আবর্জনা সরানোর তদারকি করার দিকে নজর নেই তাঁদের। এ দুর্ভোগ বেড়েছে তাঁদের।

পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনিও ব্যস্ত আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মাহাবুবুর রহমান চৌধুরীর নির্বাচনী প্রচারণায়।

ময়লা-আবর্জনার স্তূপ বিষয়ে জানতে চাইলে মুজিবুর রহমান বলেন, প্রতিদিন অন্তত ৩০ থেকে ৪০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী শহরের প্রধান সড়কসহ অলিগলির আবর্জনা পরিষ্কার করছেন। এরপরও কোনো কোনো সড়কে ময়লা জমে আছে—খোঁজ নিচ্ছেন।

দিঘির পূর্ব দিকে ৩০ গজ যেতেই বৈদ্যঘোনা সড়কের প্রবেশমুখ।

গত মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আবর্জনার স্তূপে মশা-মাছি ঘুরছে। সড়ক দিয়ে যেতে যেতে ইজিবাইক, টমটম, রিকশা, মোটরসাইকেলের যাত্রী ও পথচারীরা নাকে কাপড়ে চেপে রাখছেন। স্তূপের পাশের অন্তত ২০ থেকে ২৫টি দোকানের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারাও দুর্গন্ধ থেকে নাক বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।

স্কুলশিক্ষার্থী মঞ্জু পাল বলে, বৈদ্যঘোনা সড়কের কোথাও ডাস্টবিন নেই। বাসাবাড়ির ময়লা ফেলা হচ্ছে রাস্তায়, নয়তো পাশের ড্রেনে। সবাই ব্যস্ত নির্বাচনী প্রচারণায়। ময়লা-আবর্জনা সরানোর লোক নেই। দিনে চারবার এ সড়কে দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে নাক চেপে ধরে হাঁটাচলা করতে হচ্ছে।

গোলদিঘি এলাকাটি পড়েছে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে। এ ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর রাজবিহারী দাশ এবারও কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি ব্যস্ত নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন আরও দুজন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজবিহারী দাশ বলেন, ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য মোড়ে মোড়ে ডাস্টবিন দেওয়া আছে। কিন্তু লোকজন ডাস্টবিনে ময়লা না ফেলে রাস্তার ওপরে স্তূপ করে রাখেন। সকালে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা এসে ময়লা সরিয়ে নেন।

পাশের ঘোনাপাড়া সড়কের ড্রেনও ময়লা-আবর্জনায় ভরে আছে। খোলা ড্রেন থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। এর পাশ দিয়ে লোকজনের হাঁটাচলা করছেন নাক চেপে ধরে। দুটি সড়কের সাত কিলোমিটার ঘুরে কোথাও ডাস্টবিন চোখে পড়েনি।

ঘোনাপাড়া এলাকার বাসিন্দারা বলেন, ঘোনাপাড়া, বৈদ্যঘোনা, খাঁজা মঞ্জিলসহ অন্তত সাতটি এলাকার ১০ হাজার ভোটারের ৭০ শতাংশ সনাতন ধর্মাবলম্বী। বেশির ভাগ লোকজনের বসতি সরকারি জমি ও পাহাড়ে। এ কারণে রাস্তাঘাটের তেমন উন্নয়ন ঘটেনি।

৭ নম্বর ওয়ার্ডের পাহাড়তলী, রহমানিয়া মাদ্রাসা ও কচ্ছপিয়া পুকুর, টেকনাইফ্যা পাহাড় এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিজিবি ক্যাম্প, সিটি কলেজ ও বাস টার্মিনাল এলাকা ঘুরেও সড়কের মোড়ে মোড়ে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ দেখা গেছে। কাউন্সিল প্রার্থী জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, সবাই আছেন নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে। ময়লা-আবর্জনার দিকে নজর নেই কারও।

১২ জুন কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৫৮ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সূত্র : প্রথম আলো।

সারাদেশ-এর আরও খবর