উখিয়ায় বনভূমি রক্ষায় বনকর্মী সংকটে বন বিভাগ

৪২ হাজার একর বনভূমি রক্ষায় ৪০ জন বনকর্মী

  বিশেষ প্রতিনিধি    11-09-2023    76
উখিয়ায় বনভূমি রক্ষায় বনকর্মী সংকটে বন বিভাগ

কক্সবাজারের উখিয়া রয়েছে ৪২ হাজার একরের সুবিস্তৃত বনভূমি। কিন্তু, এর বড় অংশই এখন বনদস্যুদের দৌরাত্ম্যে উজাড়ের মুখে। তারা যখন তখন কেটে নিয়ে যাচ্ছে বনের গাছ। বিশাল এই বনভূমি রক্ষায় আছেন বন বিভাগের মাত্র ৪০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। ফলে জনবল সংকটের কারণে চেষ্টা করেও তাদের থামাতে পারছে না বন বিভাগ।

শনিবার ( ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং) সরেজমিনে দেখা যায়, উখিয়া রেঞ্জ এর আওতাধীন হলদিয়া পালং বিটে কর্মরত আছে ৩ জন ভানুকিয়া বিটে আছে ২জন, ওয়ালাপালং বিটে আছে ২জন, উখিয়া সদর বিটে আছে ১জন পৌঁছড়ি বিটে আছে ৪জন উখিয়ার ঘাট বিটে আছে ২জন থাইংখালী বিটে আছে ও মোচার খোলা বিটে আছে ২ জন ও রেঞ্জ অফিসে ৩ জন। নতুন ৫ জন মিলে সর্বমোট ২৪ জন বনকর্মী রয়েছে। এছাড়াও ইনানী রেঞ্জ এর আওতাধীন ইনানী সদর, চোয়ানখালী, জালিয়াপালং, রাজাপালং বিটসহ ৪ টি বিটে বনকর্মী ১৬ জন।

সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে। করাতকল সহ অবৈধ ডাম্পার জব্দ করেছে। সম্প্রতি উখিয়াতে অভিযান পরিচালনা করে করাতকল জব্দসহ বনবিভাগের বেশ কিছু বনভূমি উদ্ধার করা হয়েছে।

স্থানীয় আহমদ জানান, ২০১৭ সালের আগে উখিয়াতে বেশ বনভূমিতে গাছ ছিল। সামাজিক বনায়নও করেছিল । কিন্তু ২০১৭ সালে মায়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে থাকলে প্রতিনিয়ত এলাকার পাহাড় বন দখল করে ঘর বাড়ি তৈরি করেছে। এতে সাবাড় হয়েছে বনাঞ্চল।

বন ও পরিবেশ সংগঠনের সভাপতি দীপক শর্মা দিপু জানান, উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। রোহিঙ্গারাও বনভূমিতে বসবাস করছে। সে হিসেবে বনবিভাগের আরেকটু সচেতন থাকা দরকার

উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলম জানান, ৯ হাজার ৭৮.৩৯ হেক্টরের বিশাল বনভূমি রক্ষার জন্য আমার আছে মাত্র ২৪জন কর্মকর্তা কর্মচারি। আমরা বন বা বনের জমি রক্ষায় কাজ করছি। সম্প্রতি আমরা বালুর উত্তোলন, করাতকলসহ বেশ কিছু পরিবেশ বিধ্বংসী সরঞ্জাম জব্দ করা করেছি। আমাদের রেঞ্জ এ জনবল সংকট রয়েছে। তার পরেও আমরা জীবনের মায়া ত্যাগ করে সরকারি দায়িত্ব পালন করে আসছি।

তিনি আরও জানান, সরকারি বনভূমি উদ্ধারে বনবিভাগ সচেষ্ট রয়েছে। লোকবল সংকটের কারণে অনেকসময় ইচ্ছে থাকার পরও সময় মতো অভিযান চালানো যায় না। কিন্তু দখলে অভিযুক্ত এলাকাগুলোতে এখন থেকে কঠিন নজরদারি রেখে নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে। দখলদার যে-ই হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইনের আওতায় আসবে তাদের সহযোগীও।

প্রতিবেদককে মুঠোফোনে ইনানী রেঞ্জ কর্মকর্তা ফিরোজ আল আমিন জানান, ২০ হাজার একর বনভূমি রক্ষায় অন্তত ৬০ জনের মতো লোকবল প্রয়োজন ছিল। কিন্তু লোকবল আছে ১৬ জন। লোকবল সংকট থাকলেও বনভূমি রক্ষায় আমরা কঠোর অবস্থানে। যেখানেই বনভূমি দখল হবে সেখানেই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে। এবং উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এইসব শুধুমাত্র আলোচনায় সীমাবদ্ধ থাকে, উদ্যোগ নেওয়ার বেলায় জিরো। তাই এই বিপুল পরিমাণ বনভূমি রক্ষায় বনকর্মী বাড়াতে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সচেতনমহল।

সারাদেশ-এর আরও খবর