ইনস্টাগ্রামে দিনে ১৪ ঘণ্টা, ভয়ংকর ঘটনার মুখোমুখি তরুণী

  বিশেষ প্রতিনিধি    20-03-2024    68
ইনস্টাগ্রামে দিনে ১৪ ঘণ্টা, ভয়ংকর ঘটনার মুখোমুখি তরুণী

বর্তমান যুগের বেশিরভাগ তরুণ-তরুণীই সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয়। অনেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামেই ব্যয় করেন। এই অভ্যাসের কারণে অনেকে নানা সমস্যার মুখে পড়ছেন।

সম্প্রতি ২৯ বছর বয়সী এক ব্রিটিশ তরুণী দাবি করেছেন, তিনি দিনে ১৪ ঘণ্টা স্মার্টফোনে সময় কাটাতেন। বিশেষ করে ইনস্টাগ্রামেই সময় কাটতো তার। সেখানে তার অনুসারীর সংখ্যা ১ লাখ ৫৬ হাজারেরও বেশি। এর ফলে একসময় তিনি ‘ডিজিটাল ভার্টিগো’ নামে এক রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার ফেনেলা ফক্স নামের ওই তরুণী বলছেন, তিনি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত স্মার্টফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকতেন। মূলত সোশ্যাল মিডিয়া ইনস্টাগ্রামে আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালের শুরুর দিকে এই তরুণী মাথা ও ঘাড়ে ব্যথা অনুভব করেন। যা পরবর্তীতে তীব্র আকার ধারণ করে। এরপর মাথা ঘোরা ও বমি বমি ভাব শুরু হয় তার।

এমন অবস্থায় চলাফেরার জন্য হুইলচেয়ারের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে তাকে। ফেনেলা বলেন, আমি ঠিক অনুভব করেছি যে আমি সত্যিই ঠিকভাবে হাঁটতে পারি না। অনেক খারাপ বোধ করছিলাম। যা এখন শুধুই কল্পনা করতে পারি, তবে ব্যাখ্যা করা সহজ নয়।

এই সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার সেই সময় পর্তুগাল বসবাস করছিলেন। সেখানে চিকিৎসকরা তার চিকিৎসা করতে গিয়ে অবাক হয়েছিলেন। সমস্যাগুলো আরও জটিল হতে শুরু করলে যুক্তরাজ্যে মা-বাবার কাছে চলে যান তিনি। ফেনেলা বলেন, ট্যাক্সিতে করে বাসা থেকে বিমানবন্দর গিয়েছিলাম। কিন্তু ট্যাক্সি থেকে নামার পর আর হাঁটতে পারছিলাম না। পরে হুইলচেয়ার ব্যবহার করতে হয়।

এরপর শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন ফেনেলা। যখন কোথাও যাওয়ার বা ঘোরাঘুরির প্রয়োজন হয় তখন হুইলচেয়ারে করে চলাফেরা করতে হয়। তবে তিনি কখনোই বুঝতে পারেননি শুধু স্মার্টফোন ব্যবহারের কারণে তার জীবন এতটা কঠিন হয়ে পড়বে।

তরুণী বলেন, আমি ঘুম থেকে উঠে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত স্মার্টফোনে স্ক্রলিং করেছি। কিন্তু কখনো বুঝতে পারিনি আমি নিজেই আমার শরীরকে অসুস্থ করে তোলছি।

যুক্তরাজ্যের চিকিৎসকরা এই তরুণীর অসুস্থতায় অবাক হয়েছিলেন। চিকিৎসকরা এর কারণ খুঁজে পাচ্ছিলেন না। পরে তার বাবা ‘সাইবার সিকনেস’ ও ‘ডিজিটাল ভার্টিগো’ সম্পর্কিত কিছু তথ্য খুঁজে পান। সেসব পড়ার পর ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেন ফেনেলা।

সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সার বলেন, আমি আমার ফোন বন্ধ করে দিয়েছিলাম এবং আলমারির পেছনে ফেলে দিয়েছিলাম। আমার কাছে মনে হয়েছিল এটি যেন আর ব্যবহার না করি। তারপর ধীরে ধীরে হাঁটতে সক্ষম হই আমি।

এদিকে কোন মেডিকেল বিশেষজ্ঞ দ্বারা ‘ডিজিটাল ভার্টিগো’ শনাক্ত হয় তা প্রকাশ করেননি ফেনেলা। তবে কিছু চিকিৎসকরা বলেছেন, ডিজিটাল ডিভাইসে অতিরিক্ত সময় কাটানোর জন্য এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে।

মার্কিন চিকিৎসক ড. গিলিয়ান আইজ্যাকস রাসেল বলেছেন, যখন মস্তিষ্ক বুঝতে পারে আপনি দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে আছেন এবং হঠাৎ নড়াচড়া করছেন তখন সাইবার সিকনেস হয়ে থাকে। এতে ভিজ্যুয়াল ভেস্টিবুলার দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয় এবং যা মোশন সিকনেসের জন্য দায়ী।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-এর আরও খবর