যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়েছে যে তিন অস্ত্র

  বিশেষ প্রতিনিধি    27-02-2023    193
যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়েছে যে তিন অস্ত্র

২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের রুশ হামলা শুরুর এক বছর পূর্তি হয়েছে। এক বছর আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন যখন ইউক্রেনে তার বাহিনী পাঠান, তখন পশ্চিমারা ভেবেছিল যুদ্ধে দ্রুত জয় নিশ্চিত করবে মস্কো। তবে রাশিয়ার সাফল্য নিয়ে দেওয়া পূর্বাভাসগুলো বাস্তবে রূপ পায়নি। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার প্রত্যাশিত সাফল্য অর্জিত না হওয়ার পেছনে ইউক্রেনীয় বাহিনীর দক্ষ সামরিক কৌশলসহ বেশ কয়েকটি কারণ শনাক্ত করেছেন পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করছেন, পশ্চিমা বিশ্বের সরবরাহ করা অস্ত্রগুলো এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ইউক্রেন যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া তিনটি অস্ত্র নিয়ে সিএনএনের একটি বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে। সেগুলো হলো : জ্যাভেলিন, হিমার্স ও বেরাকতার টিবি২।

জ্যাভেলিন : যুদ্ধের শুরুর দিকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের দিকে দ্রুত এগিয়ে গিয়েছিল রুশ বাহিনী। সে সময় ইউক্রেনের জন্য এমন কিছুর প্রয়োজন ছিল, যা প্রতিপক্ষের হামলা ঠেকাতে পারবে। আর সে কাজটিই বেশ ভালোভাবে করতে পেরেছে জ্যাভেলিন। এটি কাঁধ থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ট্যাংকবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। ব্যক্তি একাই এটি পরিচালনা করতে পারেন। ব্যবহারের পদ্ধতি সহজ হওয়ার কারণে এ অস্ত্রের গ্রহণযোগ্যতাও বেশি। মার্কিন কোম্পানি লকহিড মার্টিন ও রেথিয়ন যৌথভাবে ক্ষেপণাস্ত্রটি তৈরি করেছে।

জ্যাভেলিন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার আগে ডিসপ্লেতে কার্সর দিয়ে লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করে দিতে হয়। জ্যাভেলিন ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পর এটি লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছানোর আগেই পরিচালনাকারী ব্যক্তি নিরাপদ অবস্থানে সরে যেতে পারেন। এতে তিনি পাল্টা হামলা থেকেও রেহাই পান।

হিমার্স : এর পুরো নাম এম১৪২ হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম। মার্কিন কোম্পানি লকহিড মার্টিন হিমার্স–ব্যবস্থার প্রস্তুতকারক ও স্বত্বাধিকারী। আসলে হিমার্স–ব্যবস্থা হচ্ছে একটি পাঁচ টন ওজনের ট্রাক, যেখানে একটি উৎক্ষেপণব্যবস্থা আছে এবং তা থেকে প্রায় একই সঙ্গে ছয়টি রকেট ছোড়া যায়। যুদ্ধক্ষেত্রের সম্মুখসারিতে হামলা চালিয়ে পাল্টা হামলা এড়াতে এটি দ্রুত অবস্থান বদল করে ফেলতে পারে।

যুদ্ধের শুরুর ধাপে জ্যাভেলিন যেমন খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে, তেমনি পরবর্তী ধাপে হিমার্স গুরুত্বপূর্ণ ওঠে। হিমার্স যে ধরনের যুদ্ধাস্ত্র ছোড়ে, সেগুলোকে গাইডেড মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম (জিএমএলআরএস) নামে অভিহিত করা হয়। এসব রকেট ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার (প্রায় ৫০ মাইল) দূরত্বের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।

বেরাকতার টিবি২ : এ ড্রোন তুরস্কের নকশায় তৈরি। ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহৃত হওয়ার কারণে এটি বিশ্বে সবচেয়ে পরিচিত চালকবিহীন ড্রোনগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে। এ ড্রোন অপেক্ষাকৃত সস্তা। এটিতে অভিযানের ভিডিও রেকর্ড করা থাকে।

এসব ভিডিওতে দেখা গেছে, এ ড্রোন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র, লেজার নিয়ন্ত্রিত রকেট এবং স্মার্ট বোমা ছুড়ে রুশ সাঁজোয়া যান, গোলাবারুদ ও সরবরাহব্যবস্থা গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আটলান্টিক কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে ফরেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক আরন স্টেইন লিখেছেন, টিবি২-এর ভাইরাল ভিডিওগুলো টিকটক যুগে আধুনিক যুদ্ধাবস্থার যথার্থ দৃষ্টান্তকে উপস্থাপন করছে। বেরাকতার টিবি২ কোনো জাদু অস্ত্র নয়, তবে এটি যথেষ্ট রকমে ভালো।

আন্তর্জাতিক-এর আরও খবর