কুতুবদিয়ায় কমিটি দ্বন্দ্বে বিভক্ত হচ্ছে বিএনপি

  বিশেষ প্রতিনিধি    24-05-2023    92
কুতুবদিয়ায় কমিটি দ্বন্দ্বে বিভক্ত হচ্ছে বিএনপি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কুতুবদিয়া উপজেলা শাখার সদ্য ঘোষিত তিন ইউনিয়নের আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক কমিটি গঠন ও বিলুপ্ত ঘোষণা করার বিধান থাকলেও স্থানীয় উপজেলা বিএনপির সভাপতির বিরুদ্ধে রাতের অন্ধকারে কমিটি অনুমোদনের অভিযোগ তুলেছেন উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। এ নিয়ে জেলার কিছু স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় কমিটি গঠন সংবাদের প্রতিবাদও জানিয়েছেন তারা।

তাদের দাবী, পূর্বে গঠিত কমিটিগুলোকে কোনরুপ কারণ দর্শানো ব্যতিরেখে ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। নবগঠিত ওই তিন ইউনিয়নের আহ্বায়ক কমিটিতে ঠাঁই পাওয়া অনেক নেতৃবৃন্দ দলীয় প্যাডে স্বাক্ষরপূর্বক ও সংবাদের প্রতিবাদের মাধ্যমে নতুন কমিটি প্রত্যাখ্যান ও পূর্বের কমিটি বহাল থাকবে মর্মে সবাইকে জানান দিয়েছেন।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড় পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমসহ দ্বীপের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যেন সমালোচনার শেষ নেই! সদ্য ঘোষিত ওই তিন ইউনিয়নের আহ্বায়ক কমিটির দ্বন্দ্বে বিভক্ত হয়ে টালমাটাল করছে কুতুবদিয়া উপজেলা বিএনপি। দলীয় নেতা-কর্মীদের ভাষ্য মতে, কমিটির দ্বন্দ্বের জেরে উপজেলা বিএনপির সংগ্রাম-আন্দোলনে প্রভাব তো পড়ছে-ই, তাছাড়া আগামীতে দলীয় লোকজনদের মাঝে মারাত্মক সংঘাতের আশঙ্কাও করছেন অনেকে।

সদ্য ঘোষিত তিন ইউনিয়নের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদনে দলীয় নেতা-কর্মীদের বিভক্তি ও প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে বিএনপির কুতুবদিয়া উপজেলা শাখার সভাপতি জালাল আহমদের নিকট মুঠোফোনে জানতে চাইলে একাধিকবার কল করা স্বত্বেও রিসিব না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, দীর্ঘ দিন ধরে কুতুবদিয়ায় বিএনপির রাজনীতিতে নেতা-কর্মীরা দু,দলে বিভক্ত হয়ে দলীয় বিভিন্ন সভা-সেমিনারের আয়োজন করে আসছে। তবে কেন বা কী কারণে তারা বিভক্ত- এমন রহস্যের কারণ জানা যায় নি। নাম গোপন রাখা শর্তে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতা কক্সবাজার নিউজ ডট.কম (সিবিএন) কে বলেন, দু,দলে বিভক্তির কারণে কুতুবদিয়ায় বিএনপির রাজনীতি নড়বড় করছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে আরও শক্তিশালী করে চাঙ্গা করা তো দূরের কথা, উল্টো পিছনে ঝিমিয়ে পড়ছেন তারা।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) লেমশীখালী ইউনিয়ন শাখার সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আকতার হোছাইনের নিকট কমিটি প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দলের সাধারণ সম্পাদককে বাদ দিয়ে সভাপতি ওই আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দিয়েছে। তবে এ বিষয়ে আর কিছু জানেন না বলে কল কেটে দেন তিনি। মুঠোফোনে কোন মন্তব্য করতে রাজি না হলেও তাহার ব্যাক্তিগত ফেইসবুক আইড়ি থেকে এবং সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সদ্য ঘোষিত ওই আহ্বায়ক কমিটি প্রত্যাখ্যানসহ কাউকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানান।

এ বিষয়ে (বিএনপি) কুতুবদিয়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এম.এ সালাম কুতুবী জানান, প্রত্যেক দলে ছোটখাটো মান-অভিমানের বিষয় থাকে। তাই বলে সভাপতি মহোদয়ের কাউকে না জানিয়ে কমিটি অনুমোদন দেয়া দূঃখজনক। যারা ওই কমিটিতে আসছে তারাও জানতো না যে কমিটিতে তাদের নাম আসবে। আমরা এর প্রতিবাদ জানিয়েছি। এই মুহুর্তে দলীয় কোন্দল সৃষ্টি হলে আগামীতে যে কোন আন্দোলন সংগ্রামে পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে দলের কাউকে না জানিয়ে আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয়ার বিষয়ে জেলার নেতৃবৃন্দকে অবগত করা হয়েছে এবং তারা পরবর্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

এদিকে বিএনপি কক্সবাজার জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এ,টি,এম নুরুল বশর চৌধূরী বলেন, আমি জেলায় রাজনীতি করি। কুতুবদিয়ায় তিন ইউনিয়নের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদনের বিষয়ে আমার কোন মতামত নেই। তবে সদ্য ঘোষিত ওই আহ্বায়ক কমিটির দ্বন্দ্বের জেরে উপজেলা বিএনপির সংগ্রাম ও আন্দোলনে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা? এ প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নে কোন মন্তব্য করতে রাজি না হলেও যারা দলকে বিভক্ত করছে তাদের সাথেই যোগাযোগ করতে বলেন এবং তারা যেমন রাজনীতি করে, আমিও রাজনীতি করি-এমনটা জানান তিনি।

সারাদেশ-এর আরও খবর