আর্জেন্টিনার আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য

  বিশেষ প্রতিনিধি    15-06-2023    89
আর্জেন্টিনার আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য

রোহিঙ্গাদের জাতিগতভাবে নির্মূলে ২০১২ সালেই গণহত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। ওই সময়ই সব রাষ্ট্রীয় কাগজপত্রে রোহিঙ্গা শব্দের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে চালু করে বাঙালি শব্দ। পরবর্তীতে সুচির সরকারের সমান্তরালে গণহত্যার পরিকল্পনা আরও নিখুঁত করে জান্তারা। হত্যা, ধর্ষণ ও বাড়িঘর পুড়িয়ে, রোহিঙ্গাদের বাধ্য করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে। সম্প্রতি আর্জেন্টিনায় রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানিতে উঠে আসে এসব তথ্য।

গলায় এমন কাটা দাগে স্পষ্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বরতার চিহ্ন। ২২ বছর বয়সী রাশিদা বেগমকে ধর্ষণের পর হত্যার চেষ্টা চালায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। আর মমতাজকে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়।

২০১৭ সালের ৩০ আগস্ট মিয়ানমারের তুলাতুলি গ্রাম থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন এই দুই রোহিঙ্গা নারী।

ওই সময় তুলাতুলিসহ রাখাইনের অন্তত ১০টি গ্রামে এমন গণধর্ষণ চালায় জান্তাবাহিনী। অনেক ক্ষেত্রে ৪০ জন নারীকে একসঙ্গে ধর্ষণ করার ঘটনাও ঘটেছে। জনসম্মুখে বা পরিবারের সামনেই ঘটেছে এসব।

আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ার্সে ফেডারেল কোটে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানিতে উঠে আসে এসব তথ্য। লন্ডন ভিত্তিক আইনী সংগঠন বার্মিস রোহিঙ্গা অরগানাইজেসন- বিআরওইউকের দায়ের করা মামলায় গণহত্যার মূল আসামি করা হয়- জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং, বৌদ্ধ ভিক্ষু অসিন ঐরাথু ও গণতন্ত্রপন্থি নেত্র অং সান সুচিকে।

শুনানিতে আরও বলা হয়, শুদ্ধি অভিযানের নামে ২০১৭ সালে শত শত রোহিঙ্গা গ্রাম পুড়িয়ে দেয় সেনাবাহিনী। নিহত হয় কমপক্ষে ১০ হাজারের বেশি। আর পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাড়ে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।

ওই সময় অং সান সু চির বেসামরিক সরকার ক্ষমতায় থাকলেও তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অভিযোগকারীরা।

শুনানিতে উঠে আসে- রোহিঙ্গা নির্মূলের মূল পরিকল্পনা আরও আগেই ২০১২ সালেই শুরু হয়। ধর্মীয় বিদ্বেষকে ব্যবহার করে সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সহায়তায় গণহত্যা শুরু করে সেনাবাহিনী। সেসময় পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় ১ লাখ ৪০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা।

আইনজীবী জানান, বিশ্বের অন্যপ্রান্তে থাকা আর্জেন্টিনায় এ মামলা শুরুই বলে দিচ্ছে- বিচারের হাত থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পালানোর আর কোনো পথ নেই। সুত্র: একুশে টিভি

আন্তর্জাতিক-এর আরও খবর