রুপালি গিটারের সামনে থমকে দাঁড়ায় মানুষ

  বিশেষ প্রতিনিধি    18-10-2022    163
রুপালি গিটারের সামনে থমকে দাঁড়ায় মানুষ

প্রবর্তক মোড়। চারদিকে ছুটছে গাড়ি। সড়কের মাঝখানে রুপালি গিটারটি কড়া রোদে চিকচিক করছে। কিন্তু রুপালি গিটারের মালিক না ফেরার দেশে। আজকের এই দিনে লাখো ভক্তকে কাঁদিয়ে চলে যান কিংবদন্তি সুরস্রষ্টা আইয়ুব বাচ্চু। এখনো রুপালি গিটারের সামনে থমকে দাঁড়ায় মানুষ। ‘এই রুপালি গিটার ফেলে চলে যাব দূরে, বহুদূরে’ এ গানটিই যেন সত্যিই হলো। চলে গেলেন বহুদূরে। এমন দূরে যেখান থেকে আর কখনো ফিরবেন না এই কিংবদন্তি। ‘চলো বদলে যাই’ বলে যেন নিজেই বদলে গেলেন। ছেড়ে গেলেন সবাইকে। কাঁদালেন লাখো ভক্তকে। আজ সেই রুপালি গিটারের জাদুকরের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। গিটারের জাদুতে এই শিল্পী সবার মন জয় করেছিলেন। রুপালি গিটারের প্রতিকৃতি সেই জাদু মনে করিয়ে দেয়। গিটার থাকলেও নেই সেই মানুষটি। তাই চট্টগ্রামের প্রবর্তক মোড়ে তার স্মরণে স্থাপিত রুপালি গিটারের সামনে আসতেই অনেক ভক্তকে কান্না করতে দেখা যায়। মঙ্গলবার দুপুরে প্রবর্তক মোড়ে গিয়ে দেখা যায় সোনারোদ পড়ে চিকচিক করছিল রুপালি গিটারটি। সেই গিটারের চারপাশ ভরে উঠেছে হরেক রকম ফুলে। পশ্চিম মুখ করে হেলান দিয়ে থাকা গিটারটি দেখতেই উৎসুক অনেকেই ভিড় করেন। কেউ কেউ সেলফি তুলছিলেন। চারবছর আগে আজকের দিনে আচমকা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ভক্তদের প্রিয় ‘এবি’। এরপর কফিনবন্দী হয়ে শেষবারের মতো আইয়ুব বাচ্চু ফিরে আসেন চট্টগ্রামেই। প্রিয় শিল্পীকে বিদায় জানাতে লাখো মানুষ ছুটে আসেন জানাজায়। জমিয়াতুল ফালাহ ময়দান থেকে আশপাশের ভবনের ছাদ-কোথাও ছিল না তিল ধারনের ঠাঁই। সেই জানাজায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন উপস্থিত হয়ে প্রয়াত শিল্পীর স্মৃতি সংরক্ষণ করার ঘোষণা দেন। পরের বছর শুরু হয় সেই স্মৃতি রক্ষার কাজ। নগরীর প্রবর্তক মোড়ে আইয়ুব বাচ্চুর রুপালি গিটারের আদলে বসানো হয় একটি প্রতিকৃতি। অডিও ইনক নামে একটি প্রতিষ্ঠান কাজটি করে। গিটারটির উচ্চতা ১৮ ফুট। এর বেসমেন্টের উচ্চতা ৪ ফুট। ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সেই গিটারটি উন্মুক্ত করা হয়। স্টিলের পাত দিয়ে তৈরি গিটারটি। গিটারের চারপাশে ফোয়ারা দেওয়া হয়েছে। আছে হরেক রকম ফুল। উৎসবের দিনগুলোতে সন্ধ্যায় দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জার সঙ্গে সন্ধ্যায় ফোয়ারার পানি ছাড়া হলে অন্যরকম সৌন্দর্য তৈরি হয়। চলতি পথে এখন অনেকেই থমকে দাঁড়ান প্রতিকৃতিটির সামনে। মঙ্গলবার বেলা ১২টা। নগরের প্রবর্তক মোড়ে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছেন এক যুবক। পরিচয় জিজ্ঞাসা করতেই ঝলঝল চোখে উত্তর দিলেন মাসুম আহমেদ। তিনি বলেন, ‘নব্বই দশকের উত্তাল সময়ে আইযুব বাচ্চুর গান ছিল আমাদের বেঁচে থাকার প্রেরণা। এখনো গুণগুণ করে যে কটা গান গাই, সবই তো আইয়ুব বাচ্চুর। ভাস্কর্যটির সামনে আসলে তাই মনের অজান্তেই ভিজে যায় চোখ। ’

বিনোদন-এর আরও খবর