চলমান আন্দোলনেই সরকার পতন: মির্জা ফখরুল

  বিশেষ প্রতিনিধি    01-03-2023    198
চলমান আন্দোলনেই সরকার পতন: মির্জা ফখরুল

চলমান আন্দোলনের মধ্য দিয়েই আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই জনগণের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা নেই।

তারা ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পরিকল্পিতভাবে দেশের টাকা লুট ও পাচার করতে একের পর এক মেগা প্রকল্প করছে। এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। একমাত্র পথ আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের বিদায় করতে হবে।

মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

জাতীয়তাবাদী যুবদলের নবগঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের নিয়ে মাজারে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল। প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করেন নেতারা।

গত ২২ ফেব্রুয়ারি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও আব্দুল মোনায়েম মুন্নার নেতৃত্বে ২৫১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয় বিএনপি। মাজারে বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালউদ্দিন টুকু, সিনিয়র সহসভাপতি মামুন হাসান, সহসভাপতি নূরুল ইসলাম নয়ন, জাকির হোসেন নান্নু, মাহবুবুল হাসান ভূঁইয়া পিংকু, কামরুজ্জামান দুলাল, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, সাঈদ ইকবাল টিটু, মোস্তফা জগলুল পাশা পাপলু, খন্দকার এনামুল হক এনাম, সহসাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মিশু, আসাদুজ্জামান পলাশ, তরিকুল ইসলাম টিটু, সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল করিম সরকার, মিনহাজুল ইসলাম ভুঁইয়া মিনহাজ, আসাদুল আলম টিটু, গিয়াসউদ্দিন মামুন, সাজিদ হাসান বাবু, নাজমুল হুদা রাজু প্রমুখ।

জনদুর্ভোগের মধ্যেও সরকার উৎসব শুরু করেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের প্রতি সরকারের দায়-দায়িত্ব নেই, সে কারণে তারা এখন উৎসব শুরু করেছে। তারা কিশোরগঞ্জে উৎসব অনুষ্ঠান করছে।’

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, তারা তো এটা স্বীকারই করতে চায় না, দেশে একটা অর্থনৈতিক সংকট চলছে। দেশে মূল্যস্ফীতি চরম আকার ধারণ করেছে। দেশের সাধারণ মানুষ আজকে চাল কিনতে পারছে না।

কার্ডের মাধ্যমে চাল বিক্রির সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ভয়ংকর মারাত্মক খবর হলো ওএমএসের কার্যক্রম তারা বন্ধ করে দেবে এবং কার্ডের মাধ্যমে তারা আবার চাল বা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করবে। কার্ডের মাধ্যমে নিত্যপণ্য বিক্রিতে আরেকটা দুর্নীতির জায়গা খুলবে।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, সরকার বিদ্যুৎ চুক্তি করেছে ভারতের আদানি কোম্পানির সঙ্গে। সেই বিদ্যুৎ চুক্তি অপ্রয়োজনীয় চুক্তি, অসম চুক্তি এটা দেশ-বিদেশের সবাই বলছে। বাংলাদেশকে শুধু পয়সাই দিতে হবে, কিন্তু বাংলাদেশ লাভ পাবে না।

এ ধরনের চুক্তিগুলোর মধ্য দিয়ে, এ ধরনের প্রজেক্টের মধ্য দিয়ে তারা সম্পদ লুট করেছে, বিদেশে সম্পদ গড়ছে।’ ক্ষমতায় আসার পর থেকে সরকার একের পর এক বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে টাকা ব্যয় করে অর্থ লুট করছে, পাচার করছে এবং বিদেশে সম্পদ গড়ে তুলছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, এই সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। তবেই দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে।

বর্তমান অবস্থা উত্তরণে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আন্দোলন শুরু করেছি। এই আন্দোলনে আমাদের ১৭ জন নেতাকর্মীকে রাজপথে হত্যা করা হয়েছে। গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রবিরোধী আওয়ামী লীগ সরকারকে গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরিয়ে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণ-অভ্যুত্থান তৈরি হবে। সে কারণে বলছি আন্দোলন, আন্দোলন, আন্দোলন করেই এই গণবিরোধী ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব।

জাতীয়-এর আরও খবর