নাইক্ষ্যংছড়ি উপবন পর্যটন কেন্দ্র খোলার দিন পাহাড়ী-বাঙ্গালী একাকার

  বিশেষ প্রতিনিধি    29-08-2022    328
নাইক্ষ্যংছড়ি উপবন পর্যটন কেন্দ্র খোলার দিন পাহাড়ী-বাঙ্গালী একাকার

দীর্ঘ সাড়ে ৪ মাস বন্ধ পর খুলে দেয়া হয়েছে সীমান্ত শহর নাইক্ষ্যংছড়ি উপবন পর্যটন কেন্দ্রটি । খোলার এ দিনে পাহাড়ি-বাঙ্গালী একাকার এ কেন্দ্রে। ঝুলন্ত ব্রীজ যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে অতিথিদের পেয়ে। বৃহস্পতিবার এ প্রতিবেদক সরেজমিন গিয়ে এ অবস্থা জানতে পারেন সকাল সাড়ে ১১ টায়। এতে পর্যটন স্পট সংশ্লিষ্টরাও উজ্জীবিত আর পযর্টকরা উচ্ছ্বাসিত। পর্যটন কেন্দ্রটির দায়িত্বরত উপজেলা প্রশাসনের কণর্ধার উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালমা ফেরদৌস জানান, সরকারী ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার উপবন পর্যটন লেকটি খুলে দেয়া হয়েছে শর্ত সাপেক্ষে। এক কথায় প্রধান ৩ শর্তে তা খোলা হয়েছে। মাস্ক পরিহিত অবস্থায় ৫০% শতাংশ প্রবেশ অনুমতি, স্বাস্থ্য বিধি মানা। এ জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পযর্টকরা আসতে শুরু করেছে। বিকেল নাগাদ জমে উঠবে। এদিকে ৫৫ বছর জীবনের প্রথম নিজ উপজেলার পযর্টন কেন্দ্রে আসেন দুছড়ি ইউনিয়নের দূর্গম পাহাড়ি উপজাতি পল্লীর ম্রো কারবারী আমঝিরি পাড়ার কাইফু ম্রো। তার সাথে আছেন চৈংলাইন ঝিরি পাড়ার ইয়াং রিং কারবারী। তারা দুজনই দেশের সবচাইতে দূর্গম জনপদে বসবাস করেন। তারা রেডিও (বেতার) তে শুনেছেন বৃহস্পতিবার পযর্টন কেন্দ্র খুলবে। তাই তারা ছুটে এসেছেন এখানে। পাহাড়ি কন্যা নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের এ পযর্টন কেন্দ্রের রূপ দেখে তারা মহা খুশি-বিমোহিত। তারা আরো জানান বৃষ্টি কমে গেলে পরিবার-পরিজন নিয়ে আবার আসবেন এখানে। অপরদিকে ভ্রমণ পিপাসূ ঢাকার পযর্টক পঞ্চশোর্ধ আশরাফ হোসেন। তার সাথে থাকা রূপন্তী, তানভিয়া, তানজিদ, তাশরীফ, শাহ আলম ও আন্জুমান আরা জানান, তারা ঢাকা থেকে রাতে রওয়ানা দিয়ে সোজা চলে এসেছেন এ পাহাড়ি কন্যার কাছে। দুপুরে তারা কক্সবাজার যাবেন। কক্সবাজার যতবার আসেন ততবারই অপরূপ সুন্দরের পাহাড়ি এ পর্যটন কেন্দ্রটি তারা ঘুরে যান। তারা আরো বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ির সুন্দর বর্ণনাতীত। এখানে রয়েছে তিন পার্বত্য জেলার সবচেয়ে দীর্ঘ ঝুলন্ত সেতু, ওয়াচ টাওয়ার, রূপালী স্পীড বোর্ট, সোনালী ঝর্ণা ও গয়াল খামার সহ আরো কত কী ! নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মচারী জানান, এতো দিন উপবন লেকটি বন্ধ থাকায় পর্যটন খাতে প্রায় অনেক টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। বেকার হয়েছে অনেক মানুষ। সারাদেশের মতো নাইক্ষ্যংছড়ি উপবন পর্যটন কেন্দ্রটি খুলে দেয়ায় সবার মাঝে নেমে এসেছে আনন্দের আমেজ। সতেজ হয়েছে সব কিছু। হোটেল রেস্তোরা সাজিয়ে রেখেছে মালিকরা। জমজমাট পযর্টন কেন্দ্র। নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, কক্সবাজারের পাশের পাহাড়ে ঘেরা এ পর্যটন কেন্দ্র টি অনেক ফেমাস। এখানকার সবকিছু নিরাপদ। পুলিশ পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বক্ষণিক খোঁজ খবর নেন। এটি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে মাত্র ২৪ কিলোমিটার পূর্বে। যা রামু রাবার বাগানের বুক চিরে মাত্র ৬ কিলোমিটার পূর্বে পিছঢালা রাস্তায় নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে অবস্থিত।

পর্যটন-এর আরও খবর