ফিফার চিঠি’র বিশদ ব্যাখ্যা দিলেন সালাউদ্দিন

  বিশেষ প্রতিনিধি    10-01-2023    168
ফিফার চিঠি’র বিশদ ব্যাখ্যা দিলেন সালাউদ্দিন

বাফুফের কয়েকজন কর্মকর্তাকে (বেতনভুক্ত) দেওয়া ‘ফিফার চিঠি’ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলন করতে হলো কাজী সালাউদ্দিনকে। তবে সাবেক এই তারকা ফুটবলার এই বিষয়ে কিছুই জানেন না। এমনকি এ বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন।

সোমবার (৯ জানুয়ারি) বিকালে হঠাৎ করে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিলেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। বাফুফে ভবনে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে সহ-সভাপতি আতাউর রহমান ভূঁইয়াকে পাশে রেখে ‘ফিফার চিঠি’ ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে বিশদ ব্যাখ্যা দিতে হয়েছে তাকে।

শুরুতে সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘আজকে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছি এ কারণে যে—গত কয়েকদিন ধরে দেখছি ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কিছু খবর, যা নিয়ে আমার কিছু আপত্তি আছে। আপত্তি থেকে বড় ব্যাপার হলো, কিছু ব্যাপার আমার কাছে পরিষ্কার নয়। আপনারা যেটা বলছেন, আমাদের চারজন সংগঠকের নামে চিঠি এসেছে, আমি এর বাস্তবতা কিছুই জানি না। আমার কাছে ফিফার এ ব্যাপারে কোনও কনফার্মেশন নেই।’

ব্যক্তিগতভাবে কেউ চিঠি পেয়ে থাকলেও তা নিয়ে অবগত নন সালাউদ্দিন, ‘বিশেষত চ্যানেল ২৪ ও ডিবিসি নিউজ যেটা করছে, আপনারা আমাকে একটু তথ্যটা জানালে তাদের কাছ থেকে আমি জানতে পারবো, ব্যাপারটা কী? আমি সভাপতি হিসেবে কোনও চিঠি রিসিভ করিনি। বাফুফেকেও ফিফা কোনও চিঠি দেয়নি। ব্যক্তিগতভাবে কেউ যদি কিছু পেয়ে থাকে সেটা আমার জানা নেই।’

ক্রীড়াপ্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বাফুফে সভাপতির এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেই প্রসঙ্গ ধরে সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘মন্ত্রী আমাকে বলেছেন, সভাপতি হিসেবে আমার ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। ফিফার কাছ থেকে কোন ডাইরেক্টিভ পাইনি। আপনারা জানালে আমরা ব্যবস্থা নেবো।’

নিজের স্বচ্ছ অবস্থান তুলে ধরে টানা চারবারের সভাপতি বলেছেন, ‘ফিফার কাছে মিসম্যানেজমেন্টের জন্য একশ টাকাও কখনও জরিমানা দেইনি। আমি অডিট রিপোর্ট দেখেছি। আমাদের বিরুদ্ধে অ্যান্টি-করাপশন থেকে একটা চিঠি পেয়েছিলাম। সেখানে বলা হয়েছিল, মিডিয়ায় কিছু সংগতির কথা জেনে আমরা তদন্ত করতে চাই। তখন আমরা তাদের বলি—অবশ্যই আপনারা তদন্ত করেন। দুদক গোটা ব্যাপারটা তদন্ত করে আমার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগের ভিত্তি খুঁজে পায়নি। চিঠি দিয়ে তা জানিয়েও দিয়েছে।’

মিডিয়ার প্রতি দোষারোপ করে সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘আপনাদের হাফ-নিউজে মাঠে লোক আসা বন্ধ হয়, স্পন্সর আসা বন্ধ হয়। কেন, কীসের স্বার্থে করেন—সেটা আমি জানি না। আমি খেলাটাকে ভালোবাসি। হাফ-হার্টেড, বেসলেস নিউজ করে আমাদের কষ্ট দেয়। আমি কোনও চিঠি পেলে অবশ্যই আপনাদের সামনে সেটা প্রকাশ করবো।’

কাজী সালাউদ্দিন সভাপতি হওয়ার পর ঢাকার ফুটবল নিয়মিত চলছে। ঘরোয়া ফুটবল নিয়ে কাউকে মাঠে-ময়দানে আন্দোলন করতে হয়নি। সেই প্রসঙ্গে সালাউদ্দিন মিডিয়ার কিছুটা ক্ষোভ রেখেই বলেছেন, ‘১২ বছর ধরে লিগ চলছে, খেলা মাঠে আছে সেটা তো বলেন না। সপ্তাহে ২ দিন যে খেলা হয়, সেটা তো ঢালাওভাবে বলেন না। এই দুঃখটা জানাতেই আপনাদের কাছে এসেছি।’

তবে সামনের দিকে আইনজীবী নিয়োগ দিয়ে পুরো বিষয়টি দেখবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এই সাবেক তারকা ফুটবলার, ‘আমি এখানে ফুটবল করতে এসেছি, কারও সঙ্গে ঝগড়া করতে আসিনি। ফাইন্যান্স নাই, মাঠ নাই, নানা সমস্যা। এখন একজন আইনজীবীকে ভাড়া করবো, যাতে সামনে এরকম ব্যাপার আসলে তিনি মোকাবিলা করতে পারেন।’

এক প্রশ্নের উত্তরে সালাউদ্দিন ব্যাখ্যা দিয়েছেন এভাবে, ‘সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব আমাকে জানানো, তবে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। আমি খতিয়ে দেখার চেষ্টা করেছি। হয়তো কোনও কারণে জানাচ্ছে না। আমি আনঅফিসিয়ালি ফিফার সঙ্গে কথা বলেছি। ফিফা আমাকে বলেছে—এ ব্যাপারে তোমার সঙ্গে আলোচনা করার কিছু নেই। আমরা কিছু তদন্ত করছি।’

বাফুফেতে ফিফা প্রদত্ত একজন ফাইন্যান্সিয়াল কনসালটেন্ট কাজ করছে ২ বছর ধরে। এই প্রসঙ্গে সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘আমি যেটা জানি, আমাদের ফরম্যাট ফিফার সঙ্গে মিলে না। কনসালটেন্ট দিয়ে বলছে শেখানোর জন্য। এশিয়ার ৩৭টা দেশে এমন কনসালট্যান্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ফিফার অর্থ কোনও সময় বন্ধ হয়নি। সবকিছু ঠিক আছে।’

খেলাধুলা-এর আরও খবর