আফগানদের ছয় উইকেটে হারিয়ে বাংলাদেশের সিরিজ জয়

  বিশেষ প্রতিনিধি    16-07-2023    86
আফগানদের ছয় উইকেটে হারিয়ে বাংলাদেশের সিরিজ জয়

আফগানিস্তান: ১১৬/৭ (১৭ ওভার)

বাংলাদেশ: ১১৯/৪ (১৬.১ ওভার)

শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৪ রান। ওয়াফাদারকে পুল করে বাউন্ডারির বাইরে ফেলেন শামীম। ছয়! ৫ বল হাতে রেখে বাংলাদেশ জিতে গেলো ৬ উইকেটে। সঙ্গে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতলো লাল সবুজের দল। এই প্রথম আফগানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে সিরিজ জিতলো সাকিব অ্যান্ড কোং। সাকিব ১৮ ও শামীম ৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন লিটন। এ ছাড়া ১৯ আসে হৃদয়ের ব্যাট থেকে। ওপেনিং জুটিতে আসে ৬৭ রান। এরপর ৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে দল। সাকিব সেই বিপদ সামাল দেন হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে। আফগানদের হয়ে ২ উইকেট করে নেন মুজিব-আজমতুল্লাহ।

সাকিব-হৃদয়ের পালটা আক্রমণে জয়ের পথে বাংলাদেশ

হঠাৎ করে ৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ ছন্দ হারিয়ে ফেলে। বল-রানের পার্থক্যও বেড়ে যায়। প্রয়োজন ছিল পালটা আক্রমণের। সেটি করেছেন সাকিব-হৃদয়। দুজনে দারুণ এক জুটি গড়ে ২১ বলে ৩১ রান যোগ করেন। মুজিব-রশিদকে দারুণ সব মারে বিধ্বস্ত করেন সাকিব। আজমতুল্লাহকে ফ্লিক করে অসাধারণ এক ছয় মারেন হৃদয়।পরের বলে অবশ্য মারতে গিয়ে আউট হন তিনি। হৃদয় ১৭ বলে ১৯ রান করে। ক্রিজে সাকিবের সঙ্গী শামীম।

হঠাৎ ছন্দপতন, বিপাকে বাংলাদেশ

মুজিবের করা অফে বেরিয়ে যাওয়া বল সজোরে হাঁকিয়েছিলেন লিটন। কিন্তু কাভারে রশিদ শূন্যে ভেসে ডান দিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্যাচ ধরেন। ৩৬ বলে ৩৫ রান করে লিটন ফেরেন সাজঘরে। লিটনের আউটে ৬৭ রানে ভাঙে ওপেনিং জুটি। লিটনের আউটের ১ বল পরেই আউট হন আফিফও। অফের বল স্লগ সুইপ করতে চেয়েছিলেন আফিফ। ব্যাটে-বলে সংযোগ ঠিকমতো হয়নি। মিডউইকেটে ক্যাচ ধরতে ভুল করেননি করিম। আফিফ ২০ বলে ২৪ রান করেন। ক্রিজে দুই নতুন ব্যাটসম্যা শান্ত-হৃদয়। শান্তও বেশিদূর যেতে পারেননি। ৬ বলে রান করে আজমতুল্লাহর বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন সাজঘরে।

লিটন-আফিফে পাওয়ার প্লেতে দুর্দান্ত বাংলাদেশ

ওপেনিংয়ে লিটন দাসের সঙ্গী আফিফ। এই প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ওপেনিংয়ে নেমেছেন আফিফ। রনি ইনজুরিতে থাকায় আফিফ খেলছেন আজ। দুজনের ওপেনিং জুটি দুর্দান্ত শুরু করে। যদিও লিটনের যখন ২২ রান ছিল তখন আফিফের শুন্য। এরপর আফিফও ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। মুজিবকে হাঁকান দারুণ এক ছয়। অন্য প্রান্তে লিটন দুর্দান্ত। শুরু থেকেই ফারুকিদের উপর চওড়া হয়েছেন। দুজনের জুটি থেকে মাত্র ৩০ বলে ৫০ রান আসে।

সিরিজ জয়ে বাংলাদেশের প্রয়োজন ১১৯

টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে আফগানিস্তান ৭ উইকেটে ১১৬ রান করে। বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য ১১৯ রান। বল হাতে বাংলাদেশের শুরুটা দারুণ হয়। পাওয়ার প্লেতে আফগানরা ৩৪ রান করে ২ উইকেট হারিয়ে। ৭.২ ওভার খেলা না হতেই আসে বৃষ্টি। ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট বন্ধ থাকার পর ৮.১৫ মিনিটে খেলা শুরু হয়। ২০ ওভারের পরিবর্তে ১৭ ওভার করে খেলা হচ্ছে। বৃষ্টির পর বল হাতে দারুণ শুরু করে বাংলাদেশ।

সাকিব জোড় আঘাতে লাগাম টেনে ধরেন। মাঝে হাসান-তাসকিন ২ ওভারে ২৮ রান দেন। শেষে মোস্তাফিজ-তাসকিন দারুণভাবে শেষ করেন। আফগানদের হয়ে সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন ওমরজাই। এ ছাড়া ইবরাহীম ২২ ও করিম ২০ রান করেন। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন তাসকিন। ২টি করে উইকেট নেন সাকিব-মোস্তাফিজ। নাসুম উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে মাত্র ১৫ রান দেন।

শেষ ২ ওভারে মোস্তাফিজ-তাসকিনের উইকেট

বৃষ্টির পর দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল আফগানিস্তান। এরপর আজমত-জানাতের জুটি তাদের পথ দেখায়। দুজনে খেলেন হাত খুলে। ২৯ বলে যোগ করেন ৪২ রান। ১৬তম ওভারের পঞ্চম বলে মোস্তাফিজকে মারতে গিয়ে ডিপ থার্ডে ধরা পড়েন আজমত। তিনি ২১ বলে ২৫ রান করেন। এরপর শেষ ওভারের তৃতীয় বলে করিমকে ফেরান তাসকিন। ২০ রান আসে এই অলরাউন্ডারের ব্যাট থেকে।

আফগানদের ১০০

হাসান-তাসকিনের করা ২ ওভারে ২৮ রান নেন আজমতুল্লাহ-করিম। তাতে এগিয়ে যায় আফগানরা। এরপর সাকিব এসে মাত্র ৬ রান দেন। ১৪ ওভারে আফগানরা ১০০ রান করে।

সাকিবের জোড়া আঘাতে ধুঁকছে আফগানিস্তান

১১তম ওভারের প্রথম বলে স্লোয়ার ছুঁড়েন সাকিব। লং অনে উড়িয়ে মারেন ইবরাহীম। টাইমিং ঠিকমতো হয়নি। বল উঠে যায় আকাশে। সেখানে থাকা আফিফ দারুণ ক্যাচ ধরেন। ২৭ বলে ২২ রান করেন আফিফ। এরপর ওভারের শেষ বলে নাজিবুল্লাহকে বোল্ড করেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ৩ বলে ৫ রান করেন নাজিবুল্লাহ। সাকিবের জোড়া আঘাতে রানের গতি কমে গেছে আফগানদের। ১২ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৭২। ক্রিজে আজমতুল্লাহ-করিম জানাত।

দুই বার জীবন পেয়ে অবশেষে আউট নবী

নাসুমের নবম ওভারের চতুর্থ বল। নবী কাভারে কাট করেছিলেন। বল যায় সাকিবের হাতে। মিস করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। পরের বলে লিটন ক্যাচ ধরতে পারেননি উইকেটের পেছনে। এরপর মোস্তাফিজ বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই ফেরান নবীকে। আগের ম্যাচে ফিফটি করা এই ব্যাটসম্যান খোঁচা দেন উইকেটের পেছনে। ২২ বলে ১৬ রান করেন নবী।

ওভার কমে খেলা শুরু

বৃষ্টিতে দুই দলের ৩ ওভার করে কমেছে। ১৭ ওভারের খেলা হবে। ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট বন্ধ থাকার পর ৮.১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে খেলা। দুজন বোলার সর্বোচ্চ ৪ ওভার করে বোলিং করতে পারবে।

বৃষ্টি থামলেও যে কারণে খেলা শুরু হচ্ছে না

৭.৪৫ মিনিটে মাঠ পর্যবেক্ষণের পর ম্যাচ অফিসিয়ালরা আবার ৮টা ৫মিনিটে পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছেন। আউটফিল্ডি ভেজা থাকার কারণে মূলত দেরি। ম্যাচ অফিসিয়ালরা পুরো মাঠ দেখে পরে সাকিব আল হাসান-রশিদ খানের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর আবার পর্যবেক্ষণের ঘোষণা দেন তারা। এর আগে প্রথম ম্যাচে রশিদ খান ভেজা আউটফিল্ডের অভিযোগ করেছিলেন হারার পর। তাই আজ সতর্ক অফিসিয়ালরা। সেন্টার উইকেটে মোস্তাফিজ বোলিং করছেন। এর আগে কিছুক্ষণ সাকিব শ্যাডো করেন।

সিলেটে থেমেছে বৃষ্টি, প্রস্তুত হচ্ছে মাঠ

প্রায় ১৫ মিনিট বৃষ্টির পর থেমেছে। সরানো হচ্ছে কাভার। তবে মাঠ প্রস্তুত হতে কিছুটা সময় লাগবে। ৭.৪৫ মিনিটে মাঠ পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরপরই জানা যাবে, কত ওভার কিংবা কখন খেলা শুরু হবে। এখনো মাঠ পরিচর্যার কাজ চলছে।

সিলেটে ঝুম বৃষ্টি

আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী ম্যাচের শুরুতে হানা দিলো বৃষ্টি। ৭.২ ওভার খেলার পর বৃষ্টি হানা দেয়। বৃষ্টির তীব্রতা ধীরে ধীরে বাড়ছে।

তাসকিনের তোপে পাওয়ার প্লেতে দুর্দান্ত বাংলাদেশ

বল হাতে শুরুটা দারুণ করেছে বাংলাদেশ। তাসকিনের তোপে ১৬ রানে উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারী দল। পাওয়ার প্লে শেষে আফগানদের সংগ্রহ ৩৪ রানে ২ উইকেট। ষষ্ঠ ওভারে মোস্তাফিজ ১৩ রান না দিলে অবশ্য আরও কম হতো। ক্রিজে লড়ছেন নবী-ইবরাহীম।

উইকেটের হাফসেঞ্চুরির পরেই আবার তাসকিনের আঘাত

তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে তাসকিনকে দারুণ ড্রাইভে চার মেরে রানের খাতা খোলেন জাজাই। পরের ৩ বলে কোনো রানের সুযোগ দেননি এই ডানহাতি পেসার। একটি ওয়াইড হয়। আর চতুর্থ বলেই জাজাইকে ফেরান সাজঘরে। এক্সট্রা বাউন্সে জাজাই কাট করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বল ব্যাটের কানায় লেগে যায় উইকেটের পেছনে। ৫ বলে ৪ রন করেন জাজাই। ক্রিজে ইবরাহীমের সঙ্গী মোহাম্মদ নবী। তাসকিন ২ ওভারে ১৪ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট।

প্রথম ওভারেই তাসকিনের আঘাত, উইকেটের হাফসেঞ্চুরি

তাসকিনের করা প্রথম ওভারের চতুর্থ বল। আউট সাইড অফের শর্ট অব লেন্থের বলকে উড়িয়ে বাউন্ডারির বাইরে পাঠান গুরবাজ। পরেই বলেই প্রতিশোধ নিলেন ডানহাতি এই পেসার। অফ দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে পুল করতে চেয়েছিলেন গুরবাজ। টাইমিং ঠিকঠাক হয়নি। শর্টে বল উঠে যায় আকাশে। তাসকিন নিজেই ধরেন ক্যাচ। গুরবাজ ফেরেন ৮ রানে। টি-টোয়েন্টিতে এটি তাসকিনের ৫০তম উইকেট। ৫৪তম ম্যাচ খেলতে নেমে উইকেটের হাফসেঞ্চুরি করেন তিনি।

ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, ইনজুরিতে রনি, একাদশে দুই পরিবর্তন

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে রোববার টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি বাংলাদেশ-আফগানিস্তান। এই ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছে বাংলাদেশ। টস জিতে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান জানিয়েছেন তারা রান তাড়া করতে চান। এর আগে প্রথম ম্যাচেও টস ভাগ্য যায় সাকিবের দিকে।

ইনজুরিতে রনি, একাদশে দুই পরিবর্তন

বাংলাদেশ দল ২ পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নেমেছে। কাঁধের ইনজুরির কারণে নেই ওপেনার রনি তালুকদার। এ ছাড়া বিশ্রামে আছেন পেসার শরিফুল ইসলাম। রনির পরিবর্তে একাদশে আফিফ হোসেন আর শরিফুলের পরিবর্তে খেলবেন পেসার হাসান মাহমুদ।

একাদশে যারা, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, শামীম পাটোয়ারী, মেহেদি হাসান মিরাজ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ ও নাসুম আহমেদ।

আফগানিস্তান একাদশ

আফগানিস্তান এক পরিবর্তন নিয়ে নেমেছে। ফরিদ আহমেদের পরিবর্তে খেলবেন ওয়াফাদার মোমাদ। আফগান জার্সিতে অভিষেক ঘটছে তার।

রশিদ খান (অধিনায়ক), রহমানউল্লাহ গুরবাজ (উইকেটরক্ষক), হজরতউল্লাহ জাজাই, ইব্রাহিম জাদরান, মোহাম্মদ নবি, নাজিবুল্লাহ জাদরান, করিম জানাত, মুজিব উর রহমান, ফজলহক ফারুকি, আজমতউল্লাহ ওমরজাই, ওয়াফাদার মোমাদ।

টি-টোয়েন্টিতে দারুণ বছর

ঘরের মাঠে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ডের পর আজ আফগানিস্তানের পর জিতলেই বছরে সবগুলো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতার রেকর্ড গড়বে বাংলাদেশ। এর আগে বছরে সবগুলো সিরিজ জেতার কোনো রেকর্ড নেই লাল সবুজের দলের। শুধু তাই নয় আফগানদের বিপক্ষেও প্রথম সিরিজ জয়ের রেকর্ড হবে।

আত্মবিশ্বাসী হৃদয়

এই সিরিজের পর ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে লম্বা বিরতিতে যাবে দল। পরবর্তী খেলা ২০২৪ সালের শুরুতে। প্রথম ম্যাচে ২ উইকেটে জয়ের পর সিরিজ জয়েও আত্মবিশ্বাসের কথা জানিয়েছেন তাওহীদ হৃদয়। ‘এই টাইপের ম্যাচ যার সঙ্গে জিতি না কেন, আত্মবিশ্বাস সব ক্রিকেটারকে দেবে। এই রকম ম্যাচ কমই হয়, আমি মনে করি।’

চোখে চোখ রেখে জিততে চান শরিফুল

গতকাল সারাদিন সস্ত্রীক ঘোরাফেরা আর খাওয়া-দাওয়ার ব্যস্ত থাকা শরিফুল ইসলাম যেন আরও এক কাঠি সরেস। বিকেলে সংবাদমাদ্যমে পাঠানো ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন চোখে চোখ রেখে লড়াই করতে নামবে বাংলাদেশ।

‘আসলে র্যাঙ্কিং তো এখন ম্যাটার করে না। টি-টোয়েন্টিতে বিশেষ করে, ১২০ বলের খেলা; বলা যায় না কখন কার দিকে চলে যায়। যতই আফগানিস্তান র্যাঙ্কিংয়ে আমাদের উপর থাকুক না কেন, আমরাও লড়াই করতে নামব। তাদের চোখে চোখ রেখে চেষ্টা করব, দেখা যাক কি হয়।’

খেলাধুলা-এর আরও খবর