আগামী নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকার ঘোষণা আ.লীগের

  বিশেষ প্রতিনিধি    30-12-2022    137
আগামী নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকার ঘোষণা আ.লীগের

বিএনপি-জামায়াতের যেকোনও ষড়যন্ত্র ও বিশৃঙ্খলা রাজপথে প্রতিরোধ করার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। দলটির নেতারা বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজপথে অবস্থান থাকবে। আক্রমণ করলে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।’ শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে দলটির নেতারা এই ঘোষণা দেন।

বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য, অপরাজনীতি ও অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এদিন রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে সকাল থেকে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে এই সমাবেশে মোবাইল ফোনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিএনপি-জামায়াতের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় আছি। আমরা আক্রমণকারী হবো না কিন্তু তারা আক্রমণ করলে রাজপথে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা মাঠে আছি, নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকবো। আজ বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে মৌলবাদী সন্ত্রাসীরা মাঠে নেমেছে। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে। উন্নয়নকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রাখতে হবে। দেশের উন্নয়ন-অর্জনকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। ক্ষমতার মঞ্চে উন্নয়নকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনার সরকারকে বাঁচাতে হবে। আমরা ক্ষমতায় আছি। আমরা আক্রমণকারী হবো না কিন্তু তারা আক্রমণ করলে রাজপথে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।’

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘বিএনপি বলেছিল তারা ৩০ ডিসেম্বর মিছিলে মিছিলে সয়লাব করে দেবে। কই, তাদের মিছিল তো দেখলাম না? রাজপথে রয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। বিএনপি-জামায়াত কাগুজে বাঘ। তারা সন্ত্রাস করে, ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় যেতে চায়। এটা আমরা হতে দিতে পারি না। এই ষড়যন্ত্রকারী, আগুনসন্ত্রাসী, মানুষ হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করতে হবে। এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। তারা কোনও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ষড়যন্ত্র করলে দাঁতভাঙা জবাব দিতে হবে। আপনারা পাহারায় থাকলে ঢাকা শহরে আগুন-সন্ত্রাসীরা আর সন্ত্রাস করতে পারবে না।’

আগামী নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকার ঘোষণা আ.লীগের

সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত মানুষের জানমালের যাতে ক্ষতি করতে না পরে, কোনও মতলব যাতে হাসিল করতে না পারে, এ জন্য আমরা পাহারাদারের ভূমিকা পালন করছি, তারা সফল হয়নি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সেই বাংলাদেশকে পেছনে ফেলা যাবে না। যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, সেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা আবার ষড়যন্ত্র করছে। তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের এই ভূমিকে যাতে কেউ ক্ষতবিক্ষত করতে না পারে, সে জন্য আমরা পাহারায় থাকবো। বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগকে ভয় দেখিয়ে কিছু করতে পারবে না, লাভ হবে না, আওয়ামী লীগ জনগণের দল।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সাপ যেমন কিছু দিন পরপর চামড়া-খোলস বদলায়, বিএনপির জোটও কিছু দিন পরপর খোলস বদলায়। কোনও সময় ২০ দল হয়, ১২ দল হয়; এখন বলছে ৩৩ দল। কিন্তু ৩৩ দলের মধ্যে ৩০টাকে খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। কারণ, কয়েকটি হাতে গোনা দল ছাড়া বাকিগুলো আসলে সাইনবোর্ড-সর্বস্ব দল।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই বিএনপির আজকের যে গণমিছিল, এতে মানুষ আতঙ্কিত। তাদের এই গণমিছিলের কর্মসূচিতে ঢাকা শহরের মানুষ আতঙ্কিত। সরকারি দল হিসেবে আমাদের দলের দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের পাশে থাকা। দেশে যাতে শান্তি-শৃঙ্খলা-স্থিতি কেউ বিনষ্ট করতে না পারে, সে জন্য আমরা মাঠে আছি। বিএনপি এবং তার মিত্ররা যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায়, আমরা জনগণকে নিয়ে প্রতিহত করবো। আমরা রাজপথে ছিলাম, আছি, থাকবো। তাদের কোনও বিশৃঙ্খলা করতে দেওয়া হবে না।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে, তাই বিএনপি আতঙ্কিত আগামী নির্বাচনেও তাদের ভরাডুবি হবে বলে। বিএনপি-জামায়াত ওত পেতে বসে আছে কখন ছোবল মারবে। তাই আপনারা সতর্ক পাহারায় থাকবেন। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা তাদের প্রতিরোধ করবো। তারা যাতে দেশে কোনও বিশৃঙ্খলা করতে না পারে, এ জন্য আমরা রাজপথে অবস্থান নিয়েছি। আমাদের এই অবস্থান আগামী নির্বাচন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শহীদ সেরনিয়াবাত, হাজী মোহাম্মদ শাহীন, আব্দুস সাত্তার মাসুদ, হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মহি, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন প্রমুখ।

জাতীয়-এর আরও খবর