রোহিঙ্গা সংকটে স্থানীয় প্রয়োগকারি সংস্থার সক্ষমতা শক্তিশালীকরণে রামুতে কর্মশালা

  বিশেষ প্রতিনিধি    19-06-2023    115
রোহিঙ্গা সংকটে স্থানীয় প্রয়োগকারি সংস্থার সক্ষমতা শক্তিশালীকরণে রামুতে কর্মশালা

রামু উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল বলেছেন- সভ্য সময়ে এসেও এখন সাধারণ মানুষ অনেক অসহায়। সামাজিক নিরাপত্তা ও আইনী সহায়তা পেতে মানুষকে এখনো হয়রানির শিকার হতে হয়। আইনী ব্যবস্থা, এনজিও এবং অন্যান্য সংস্থাগুলো সুবিচার নিশ্চিতে কাজ করলেও তা এখনো পর্যাপ্ত নয়। একসময় পুলিশ অনেক পিছিয়ে ছিলো। কিন্তু এখন অনেক শক্তিশালী ও স্মার্ট হয়েছে। পুলিশ এখন অনন্য বাহিনীতে পরিনত হয়েছে।

তাই সাধারণের মানুষের আইনী অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনকে বেশী ভ‚মিকা রাখতে হবে। এছাড়া বেসরকারি সংস্থা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ সহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের আইনী সুরক্ষা নিশ্চিতে আন্তরিক ভ‚মিকা পালন করতে হবে।

রামুতে রোহিঙ্গা সংকটে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই এবং ব্যাপক সুরক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়নে স্থানীয় প্রয়োগকারি সংস্থার সক্ষমতা শক্তিশালীকরণ এবং সুরক্ষা ব্যবস্থা বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল এসব কথা বলেন। রবিবার, ১৮ জুন বেলা ১২ টায় রামু উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বেসরকারি সংস্থা ইপসার উদ্যোগে ইউএসএআইডি ও ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি (আইআরসি) এর সার্বিক সহায়তায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ারুল হোসাইন, রামু উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আফসানা জেসমিন পপি, রামু থানার উপ-পরিদর্শক মো. নাজমুল হাসান, রামু প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সোয়েব সাঈদ ও উপজেলা আনসার ভিডিপি প্রশিক্ষক আমান উল্লাহ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ারুল হোসাইন বলেন- নারী, শিশু ও অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকান্ডের মধ্যে অধিকাংশ আইনী ধারা মোতাবেক স্থানীয়ভাবে আপোষযোগ্য। অথচ এসব আপোষযোগ্য বিষয়ে প্রতিনিয়ত মামলা-মোকদ্দমা হচ্ছে। যে কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যেমন বেগ পেতে হয়, তেমনি সাধারণ মানুষকেও হয়রানি হতে হচ্ছে। এরফলে বড় ধরনের অপরাধসমূহ আড়ালে পড়ে যায়। তাই ছোট-খাটো বা আপোষযোগ্য অপরাধসমূহ স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করা জনস্বার্থে জরুরী হয়ে পড়েছে। এতে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও সময় দুটোই সাশ্রয় হবে। এজন্য সরকারি-বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকদেরও আন্তরিক ভ‚মিকা রাখার আহবান জানান তিনি।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আফসানা জেসমিন পপি বলেন- সমাজে নারী নির্যাতন, পারিবারিক কলহের মূল কারণ বাল্য বিবাহ। বাল্য বিয়ে প্রতিরোধের মাধ্যমে সমাজ-পরিবারে অপরাধ নির্মূল করা সম্ভব। এজন্য ইপসার এ প্রকল্পে বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।

সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন- ইপসার ডাবিøউপিই ম্যানেজার জকি দেওয়ান। সভায় প্রকল্প কার্যক্রম উপস্থাপন করেন- ইপসা রামু উপজেলা ব্যবস্থাপক স্বপ্তর্শী বড়–য়া। স্থানীয় এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি এর সাথে সক্ষমতা শক্তিশালীকরণ এবং সুরক্ষা ব্যবস্থা বিষয়ক মূল নিবন্ধ ও তথ্য চিত্র উপস্থাপন করেন- ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি (আইআরসি) এর টেকনিক্যাল ম্যানেজার (লিগ্যাল) হেফাজত উল্লাহ। এতে সমাপনী বক্তব্য রাখেন- ইপসার প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর শমসের উদ্দিন মোস্তফা।

সভায় জানানো হয়- রোহিঙ্গা সংকটে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই এবং ব্যাপক সুরক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ইপসার উদ্যোগ রামু উপজেলায় নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ ও আইনী সহায়তা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নির্যাতন কিংবা হয়রানির শিকার যে কোন নারী ও শিশুর পরিবার বা ব্যক্তি চাইলে ইপসার এ প্রকল্পের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও আইনী সেবা পাবে।

সভায় বক্তারা বলেন- রামু উপজেলায় বাল্য বিয়ে, নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা দেশের অন্যান্য এলাকার চেয়ে বেশী। রোহিঙ্গা পরিস্থিতি এবং সুশিক্ষিত জনগোষ্ঠি না থাকা এর অন্যতম কারণ। এরপরও সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর আন্তরিক প্রচেষ্টায় এ পরিস্থিতি অনেক উন্নতি হয়েছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নারী ও শিশু নির্যাতন ক্রমেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।

সারাদেশ-এর আরও খবর