রামুতে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য জশনে জুলুস ও মিলাদ মাহফিল

  বিশেষ প্রতিনিধি    09-10-2022    204
রামুতে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য জশনে জুলুস ও মিলাদ মাহফিল

কক্সবাজারের রামুতে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও মর্যাদা সহকারে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে আনজুমান-এ নকশবন্দিয়া মুজাদ্দেদিয়া বাংলাদেশ কক্সবাজার ও রামু উপজেলা এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআত রামুর ব্যবস্থাপনায় রবিবার, ৯ অক্টোবর সকালে আজিমুশশান জশনে জুলুস বের করা হয়। রামু উপজেলা পরিষদ চত্বর হতে শুরু হওয়া জুলুস রামুর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে রামু হাসপাতাল গেইট সংলগ্ন মাসুমিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া মাদরাসা ও এতিমখানা মাঠে এসে সমাপ্ত হয়। পরে সেখানে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য এবং রাসুল (সা:) এর জীবন চরিত নিয়ে আলোচনা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত কক্সবাজার জেলা সচিব ও আনজুমান-এ নকশবন্দিয়া মুজাদ্দেদিয়া বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলার সভাপতি অধ্যক্ষ আল্লামা মুফতি সৈয়্যদ মুহাম্মদ উল্লাহ নকশবন্দীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জুলুসের উদ্বোধন ঘোষনা করেন- রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল। আনজুমান-এ নকশবন্দিয়া মুজাদ্দেদিয়া বাংলাদেশ রামু উপজেলা শাখার সহ সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেকের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা আনজুমান-এ নকশবন্দিয়া মুজাদ্দেদিয়া বাংলাদেশ রামুর সাধারণ সম্পাদক মাস্টার ছালামত উল্লাহ। আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- রামু উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম মন্ডল, রাজারকুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান। এতে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন- বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, লেখক মাওলানা আবদুল আজিজ রজভী। মাহফিলে বক্তারা বলেন- সমগ্র পৃথিবী যখন অমাবস্যার কাল রাত্রিতে তমসাচ্ছন্ন তখন পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক অধিকার ছিল ব্যক্তি সর্বস্ব। অন্যায় অত্যাচার নির্যাতনে সমগ্র আরব বিশ্ব পুরো অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। হত্যা, লুণ্ঠন, নারী নির্যাতন ছিল নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার, মদ,জুয়া,বেহায়াপনা ছিল নিত্য দিনের সঙ্গী, মজলুমের আর্তচিৎকারে যখন পৃথিবীর আকাশ যখন ভারী হয়ে উঠেছিল তখন আরবের বুকে ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়ালে পৃথিবীতে মহান আল্লাহ প্রেরণ করেন বিশ্ব মানবতার মুক্তির কান্ডারি মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে। তাঁর আগমনে মজলুম অসহায় ফিরে পেল তার নায্য অধিকার। মুলত সাম্য ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার জন্য রাসুল (সা:) এর শুভাগমন। ঐতিহাসিক ১২ রবিউল আউয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) উপলক্ষে আয়োজিত মাহফিলে মহানবীর জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনায় আরো অংশগ্রহণ করেন- মাওলানা মুফতি আবদুর রশিদ হক্কানী নকশবন্দী, মাওলানা রেজাউল করিম, মাওলানা শোয়াইব উল্লাহ প্রমূখ। বক্তারা আরো বলেন- আইয়্যামে জাহেলিয়াতের সময়ে আরবরা ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত বর্বর, বেদুঈন, যাযাবর, শিক্ষা ও তমুদ্দিনের আলো থেকে বঞ্চিত একটি জাতি। অন্যায় জুলুম ও অনৈতিকতার সয়লাব চারিদিকে, যেখানে ভুলুন্ঠিত হচ্ছিল মনুষ্যত্ব প্রতিনিয়ত। তখনো মানবজাতি আদিম জাহেলিয়াতের ঘুম থেকে জাগেনি। ঠিক সেই সময় অরাজকতার ঘুটঘুটে অন্ধকারে আকস্মিকভাবে জ্বলে উঠলো আলোক মশাল। সভ্যতার সূর্যোদয়ের দায়িত্ব নিয়ে ৫৭০ সনের১২ই রবিউল আওয়াল পৃথিবীতে আবির্ভূত হলেন সমগ্র মানবজাতির মুক্তির দূত হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)। তাঁর যাদুর ছোঁয়ায় নবুওয়াতের মাত্র ২৩টি বছরে আরবরা বিনির্মাণ করলো এক নতুন পৃথিবী। জীবনের ক্ষতস্থান থেকে যে উৎকট দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল তা রাসুল (সাঃ) এর পরশে পরিবর্তিত হয়ে সুবাসিত আলোকবর্তিকায় পরিণত হল। তাই সামাজিক অবক্ষয় রোধ, অন্যায়-জুলুম ও অনৈতিকতার হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করে ইনসাফপুর্ন, শান্তিময় ও সমৃদ্ধশালী করার জন্য আমাদেরও রাসুল (সাঃ) এর আদর্শকে অনুসরণ করতে হবে। এতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- মাওলানা আবু বকর, মাওলানা জামাল উদ্দিন, মাওলানা আবদুস সালাম, হাজী নুরুল ইসলাম, আবদুল আজিজ, আজিজুল ইসলাম, মোহাম্মদ ইসলাম, শামসুল আলম, এস এম ছফিউল্লাহ মুনির, হাফেজ তারেকুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, এস এম নিয়ামত উল্লাহ, আহসানুল হক, মোহাম্মদ ইমরান, এস.এম.আবরারুল হক, মাওলানা নজিবুল আলম, মাওলানা দুলাল, খাজা বাকিবিল্লাহ, মাওলানা তারেকুল ইসলাম, মাওলানা রমিজ আহমদ, মাওলানা নুরুল ইসলাম, মাওলানা মিজানুল্লাহ, মাওলানা জাকের, মাওলানা আলম, মাওলানা শাহ আলম, হাফেজ মমতাজ, মাওলানা আবদুল কাদের, মাওলানা আবু সৈয়দ মাওলানা মোজাম্মেল, তৈয়্যব, ইয়াছিন, মাহের ফয়সাল, আবদুল্লাহ, নাসের ফয়সাল, শহীদ, ফাহিমসহ আনজুমানে নকশবন্দিয়া মুজাদ্দেদিয়া বাংলাদেশ কক্সবাজার ও রামু উপজেলার নেতৃবৃন্দ। জুলুসে ইসলামিক ফাউন্ডেশন রামু, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনা, ছাত্রসেনা, হিজরি নববর্ষ উদযাপন পরিষদ সহ বিভিন্ন মাদরাসা, মসজিদের খতিব ও ইমামবৃন্দ ও বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিগণ জুলুসে অংশগ্রহণ করে। মিলাদ, কিয়াম, মুনাজাত ও তাবারুক বিতরণের মধ্য দিয়ে মাহফিল সমাপ্ত হয়।

সারাদেশ-এর আরও খবর