বিএনপি এ দেশের জন্য বোঝা : কক্সবাজারে নানক

  বিশেষ প্রতিনিধি    14-10-2022    162
বিএনপি এ দেশের জন্য বোঝা : কক্সবাজারে নানক

বিএনপি এ দেশের জন্য বোঝা বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আজ শেখ হাসিনার পতাকাতলে সমবেত হয়েছে। তাঁর নেতৃত্বে কক্সবাজারসহ পুরো দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। আর এ দেশে বিএনপির সৃষ্টি মানে জঙ্গিবাদের সৃষ্টি। বিএনপি মুক্তিযোদ্ধাদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাজাকারদের গাড়িতে লাল—সবুজের পতাকা তুলে দিয়েছিল। নানক মির্জা ফখরুলকে ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, ‘ মির্জা ফখরুলরা এ দেশের জন্য বোঝা, বিএনপি এই দেশের জন্য হুমকী। তারা মাহুত ছাড়া হাতি। এখন বিএনপি রোজার ঈদের পরে, আরেকবার বলে কুরবানি ঈদের পরে, এখন আবার তারিখ দিয়েছে ডিসেম্বর মাস। এর মূল কারণ, বিজয়ের মাসকে কলঙ্কিত করার জন্যই তারা টার্গেট করেছে। খালেদা জিয়া দণ্ডিত আসামী, নির্বাচন করতে পারবে না। তার ছেলে তারেক জিয়া লন্ডনের বিশাল বাড়িতে থাকে। প্রায় ১৭—১৮টি গাড়ি নিয়ে স্ত্রী—সন্তান নিয়ে রাজকীয় জীবনযাপন করছে। দেশ থেকে লুট করা টাকা নিয়েই তারেক রহমানের এই আলিশান জীবন।’ শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) বিকালে শহীদ দৌলত ময়দানে জেলা ছাত্রলীগ আয়োজিত সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদ বিরোধী বিশাল ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনের যাতাকলে পিষ্ট ছিল বাংলার জনগণ। জিয়াউর রহমান সেদিন বারশ কর্মকর্তাকে হত্যা করেছিল। তাঁর আমলে বঙ্গবন্ধুর ভাষণও প্রচার করা যেতো না। শেখ হাসিনা যখন দেশে ফিরেছিল, দেশ ছিল অন্ধকারচ্ছন্ন। তিনি ফিরেই বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারের হত্যার বিচার করার ঘোষণা দেয়। যা বাস্তবায়নও করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাঙালি জাতি সেদিন ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। আর বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল বলে দেশে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১৪ বছর শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছে বলে দেশে শান্তির সুবাতাস বইছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নে রোল মডেল।’ তিনি বলেন, ‘দেশের আন্দোলন—সংগ্রাম ও সংকটে ছাত্রলীগ সম্মুখ সারিতে থাকে। কিন্তু বর্তমানে ছাত্রলীগে কিছু দুষ্কৃতিকারী ঢুকে পড়েছে। তাদের বিষ দাঁত উপড়ে ফেলে ছেটিয়ে ফেলে দিতে হবে। তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।’ নানক আরও বলেন, ‘কক্সবাজার একসময় খুবই অবহেলিত ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার আমলে কক্সবাজারে আন্তজার্তিক বিমান বন্দর, গভীর সমুদ্র বন্দর, শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, মেরিন ড্রাইড, মেডিকেল কলেজ, রেল লাইন, বিকেএসপিসহ একাধিক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। আগামীতে আরও কক্সবাজারের উন্নয়ন হবে।’ সমাবেশে সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা। প্রধান বক্তার বক্তব্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল—নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঐক্যবদ্ধ আছে। তাই বিএনপি—জামায়াতের কোন ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না। ছাত্রলীগ আলোক বর্তিকা হাতে নিয়ে দেশের মানুষের পাশে আছে, থাকবে।’ বিশেষ বক্তার বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশের সব সংকটে অকুতোভয় লড়াকু সৈনিকের ন্যায় কাজ করছে। বিএনপি—জামায়াত সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে হাতিয়ার করে বাংলাদেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মুছে দিতে চাই। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে স্বাধীনতা বিরোধীরা আবারও মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। তাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের শপথ নিতে হবে। ছাত্রলীগই জননেত্রী শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড হিসেবে পাশে আছে।’ সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, কক্সবাজার—৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল, কক্সবাজার—২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, মাহবুবুল হক মুকুল, অ্যাডভোকেট রনজিত দাশ, প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়া ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নজিবুল ইসলাম। এর আগে দুপুর থেকে বিভিন্ন উপজেলা, পৌরসভা, কলেজ ও ইউনিট শাখা থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে থাকে। বিকাল গড়াতেই কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠে শহীদ দৌলত ময়দান। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কক্সবাজার আগমণ উপলক্ষে জেলাজুড়ে শোভা পায় শত শত ব্যানার ও ফেস্টুন। শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোকে সাজানো হয় বর্ণিল সাজে।

সারাদেশ-এর আরও খবর