ইজিবাইক রাখা নিয়ে সংঘর্ষে পুলিশসহ ১২ জন আহত, ৭টি দোকান ভাঙচুর

  বিশেষ প্রতিনিধি    07-02-2024    51
ইজিবাইক রাখা নিয়ে সংঘর্ষে পুলিশসহ ১২ জন আহত, ৭টি দোকান ভাঙচুর

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আঞ্চলিক সড়কে ইজিবাইক রাখাকে কেন্দ্র করে উপজেলার মানিকদহ ও হামিরদী ইউনিয়নের চার গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশ গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সংঘর্ষে পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় সাতটি দোকান ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে পুকুরিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে ভাঙ্গা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে হামিরদী ইউনিয়নের ছোট মুচকুরনি গ্রামের ইজিবাইক চালক মিরাজুল মাতুব্বর তার ইজিবাইকটিতে যাত্রী নেওয়ার জন্য মানিকদহ ইউনিয়নের পুকুরিয়া বাসস্ট্যান্ডে সদরপুরের প্রবেশপথে পুকুরিয়া-সদরপুর আঞ্চলিক সড়কে রাখেন। এ সময় মানিকদহ ইউনিয়নের ব্রাহ্মণকান্দা গ্রামের ফজলু মিয়া ইজিবাইকটি সরিয়ে রাখতে বলেন। এ নিয়ে দুইজনের মধ্যে তর্ক বিতর্ক ও একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

এ নিয়ে দুই পক্ষ সংঘবদ্ধ হয়ে সন্ধ্যার পরে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে একপক্ষে হামিরদী ইউনিয়নের মহেশ্বরদী ও ছোট মুচকুরনি এবং মানিকদহ ইউনিয়নের পুকুরিয়া ও ব্রাহ্মণকান্দা গ্রামের কয়েকশত লোক ইট পাথর, ঢাল, সড়কি, রামদাসহ দেশীয় অস্ত্রসজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে অংশ নেয়। এ সময় ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষের সময় পুকুরিয়া বাসস্ট্যান্ডে সুমন ফ্যাশন, আল ইসলাম কসমেটিক্স, কাজী ফার্মেসি, পাল সুইটস, বাসু মিষ্টান্ন ভান্ডার এবং রাজু ও আক্তারের দোকান ভাঙচুর করা হয়। এই দোকানদারগণ উভয় পক্ষের সমর্থক।

খবর পেয়ে রাত সাড়ে ৭টার দিকে ভাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সংঘর্ষ থামানোর চেষ্টা করে। সংঘর্ষ থামানোর সময় সংঘর্ষকারী উভয়পক্ষের ছোড়া ইট-পাটকেলের আঘাতে ভাঙ্গা থানা পুলিশের ৫ সদস্য আহত হয়। এদেরকে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসক শারমিন রহমান বলেন, সংঘর্ষে ভাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক মো. গোলাম কিবরিয়া (৫২), কনস্টেবল আবুল কালাম (৫০), কাজী রাব্বি (২৮), শোয়েব মোল্লা (৩৭) ও জহিরুল ইসলাম (২৯) আহত হয়ে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের আঘাত গুরুতর নয়। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ইজিবাইক রাখা নিয়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষকারীরা দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শর্টগানের ৮টি গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ৮ জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সারাদেশ-এর আরও খবর