৫ একরের সরকারি পাহাড় কেটে প্লট বিক্রি

  বিশেষ প্রতিনিধি    18-10-2022    170
৫ একরের সরকারি পাহাড় কেটে প্লট বিক্রি

আনুমানিক ১০০ ফুট উচ্চতার প্রায় ৫ একরের সরকারি পাহাড় কেটে খন্ড খন্ড করে বিক্রি চলছে। এতে কেটে নেয়া হয়েছে ৩ হাজার গাছ। পাহাড় কেটে নেয়ায় ঝুঁকিতে রয়েছে দুটি বিশাল আকৃতির শতবর্ষী গর্জন গাছ (মাদার ট্রি)। যে কোন মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে এ অঞ্চলে গভীর বনের স্বাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকা ‘মাদার ট্রি’ দুটি। এলাকার সাধারণ মানুষের বাধা উপেক্ষা কক্সবাজার শহরের বাস টার্মিনালের পশ্চিম পাশের পশ্চিম লারপাড়ায় পাহাড় ও গাছ কাটার এ ভয়ঙ্কর কর্মযজ্ঞ চলছে। গত এক মাসে সেখানে সরকারি পাহাড় কেটে প্লট বিক্রি করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সেলিম ও মিজান নামের দুই ব্যক্তি। এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে মাদার ট্রি ও পাহাড় রক্ষার দাবি জানিয়েছে পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এনভায়রনমেন্ট পিপল’। সংগঠনটির প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, ‘এভাবে অক্ষত পাহাড়গুলো নির্বিচারে কেটে প্লট আকারে বিক্রি করা হলে এক সময় কক্সবাজার শহরে কোন পাহাড়ের অস্তিত্ব থাকবে না। এক সময়ের ঘন বনাঞ্চলের স্বাক্ষী হিসেবে পাহাড়টিতে এখনও দুটি মাদার ট্রি ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এসব রক্ষা করতে হবে।’ স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, বাস টার্মিনালের পশ্চিমে পশ্চিম লারপাড়ার উত্তরণ হাউজিং এর পূর্ব পাশে প্রায় ৫ একর আয়তনের বিশাল সরকারি পাহাড় দীর্ঘদিন ধরে দখলে রেখেছিলেন বাস টার্মিনাল সংলগ্ন নাপাঞ্জাপাড়া এলাকার বদিউর রহমান ও আজিজুল হক। গত কয়েকমাস ধরে বদিউর রহমান ও আজিজুল হকের পুত্র যথাক্রমে সেলিম ও মিজান পাহাড় কেটে প্লট বানিয়ে তা প্রতি শতকে এক লাখ টাকা করে বিক্রি করে আসছেন। ইতিমধ্যেই সরকারি পাহাড় বিক্রি করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তারা। পাহাড় কাটার স্থানে এখন বসতি নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। পাহাড় কাটার ফলে ধসে পড়ার ঝুঁকিতে আছে দুটি শতবর্ষী গর্জন গাছ। যোগাযোগ করা হলে সেলিম ও মিজান জানান, তাদের মা কিছু জায়গা বিক্রি করেছেন। এছাড়া সেখানে একটি মসজিদও নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে তারা পাহাড় কাটছেন না বলে দাবি করেন। কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ সারওয়ার আলম বলেন, ‘পাহাড় ও মাদার ট্রি এভাবে কেটে নেয়ার সুযোগ নেই। মাদার ট্রি রক্ষায় উদ্যোগ নেয়া হবে।’ পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক মুহম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, ‘পাহাড় কাটার বিষয়ে কোন ছাড় নেই। দ্রুত খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ সরকারি পাহাড় ও গাছ রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া।

সারাদেশ-এর আরও খবর